প্রবাসীরা দেশে টাকা পাঠাতে দিতে হবে না বাড়তি খরচ

Malদেশে রেমিটেন্স পাঠাতে এখন থেকে প্রবাসীদের আর কোনো খরচ দিতে হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বাড়াতে আমরা রেমিটেন্স প্রেরণের ওপর কোনো চার্জ রাখব না। কোনো পয়সা খরচ ছাড়াই বিদেশে বসবাসরত প্রবাসীরা যেন দেশে রেমিটেন্স পাঠাতে পারেন, আমরা সেই ব্যবস্থা করব। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন।
শনিবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অর্থনৈতিক সংবাদাতাদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে এক প্রাক-বাজেট সভায় অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবীর, অর্থসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. ইউনুসুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধসহ নানা পরিস্থিতির কারণে সেখানকার বাংলাদেশিদের আয় কমে গেছে। এ ছাড়া প্রবাসীরা যেখানে আছেন, সেখানেও তাদের সঞ্চয়ের একটা অংশ এখন রাখছেন। এসব কারণে সাম্প্রতিক সময়ে প্রবাসী আয় কিছুটা কমে গেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
জমি কেনাবেচায় নির্ধারিত মূল্যপদ্ধতি আর থাকছে না জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, জমি কেনাবেচায় অপ্রদর্শিত অর্থই কালো টাকার অন্যতম উৎস। পরে এ কালো টাকা তারা বিদেশে পাচার করে। তাই পাচার ঠেকাতে আগামী বাজেটে জমির নির্ধারিত মূল্য পদ্ধতি তুলে দেওয়া হবে।
জমি কেনাবেচায় প্রকৃত বাজারমূল্য প্রতিফলিত না হওয়ায় রেজিস্ট্রেশনের সময় জমির মূল্যের বড় একটি অংশ গোপন করে সংশ্লিষ্টরা কালো টাকার মালিক হচ্ছেন বলে অর্থমন্ত্রী মন্তব্য করেন।
আগামী অর্থবছরে বাজেটের আকার চার লাখ ছয় হাজার থেকে আট হাজার পর্যন্ত হতে পারে বলে তিনি জানান।
কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা সম্প্রসারণে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার শুরু থেকে কারিগরি শিক্ষার প্রতি বিশেষ নজর দিয়েছে। আমরা যখন ক্ষমতা গ্রহণ করি, তখন সারা দেশে বিএমইটির সংখ্যা ছিল মাত্র সাতটি, এখন এর সংখ্যা ৭৩। তবে শিক্ষার মান বাড়ানোর দিকে আরো নজর দেওয়া দরকার বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মুহিত বলেন, শিক্ষার মান বাড়াতে পাঠ্যাভ্যাস তৈরি হওয়া জরুরি। এজন্য পাঠাগার ব্যবস্থায় ব্যাপক সংস্কার করা দরকার। গ্রামে গ্রামে পাঠাগার তৈরি করতে হবে। এর জন্য সারা দেশে একটি সৃজনশীল আন্দোলন হওয়া দরকার।
পুঁজিবাজারে বহুজাতিক কোম্পানির অন্তর্ভুক্তির সময় এসেছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, একটা সময় পুঁজিবাজার ফাটকা বাজারই ছিল। কোনো আইন-কানুন, নিয়ম-নীতি ছিল না। এখন অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। এখন আর ফাটকা বাজার নয়, এর ফলাফল আমরা দেখছি। বাজার অনেকটা স্থিতিশীল। এ পরিস্থিতিতে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে বলতে পারি, তোমরা পুঁজিবাজারে শেয়ার ছাড়ো। যেসব রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি এখনো পুঁজিবাজারের অন্তর্ভুক্ত হয়নি, তাদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারি।
সভায় সাংবাদিকরা মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত এবং শিক্ষা গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানো, ভূমি খাতের দুর্নীতি রোধ, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম না বাড়ানো, ফিন্যানশিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল গঠন, কৃষিতে ন্যায্যমূল্য এবং অর্থ পাচাররোধে বাজেটে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন।
সভায় ইআরএফ সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল, সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার বার্তা সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী, মনোয়ার হোসেন, সালাউদ্দিন বাবলু প্রমুখ বক্তব্য দেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button