ইউরোপ সেরা রিয়াল মাদ্রিদ

Realচ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে মাদ্রিদ-ডার্বির আবহ। রিয়াল ও আতলেতিকো মাদ্রিদের লড়াইও হয়েছে জমজমাট।
নির্ধারিত ৯০ ও অতিরিক্ত ৩০ মিনিট শেষে ১-১ গোলে সমতা থাকায় খেলা গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। সেখানে ৫-৩ গোলে জিতে রেকর্ড একাদশ বারের মতো ইউরোপ-সেরা হওয়ার আনন্দে মেতে উঠেছে রিয়াল মাদ্রিদ। দুই বছর আগে নগর-প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে ফাইনালে হারের প্রতিশোধ নিতে তাই ব্যর্থ ডিয়েগো সিমিওনের শিষ্যরা।
মিলানের বিখ্যাত স্টেডিয়াম সানসিরোতে দুই দলই শুরু থেকে ছিল ভীষণ সতর্ক। ষষ্ঠ মিনিটে প্রথম সুযোগ আসে রিয়াল মাদ্রিদের সামনে। বক্সের ডান কোনায় গ্যারেথ বেলকে ফাউল করার সুবাদে ফ্রিকিক পায় রিয়াল। বেলেরই নেওয়া ফ্রিকিক থেকে গোল প্রায় করেই ফেলেছিলেন বেনজেমা। তবে গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাকের অসাধারণ দৃঢ়তায় রক্ষা পায় আতলেতিকো।
তবে ১৫ মিনিটে জিনেদিন জিদানের শিষ্যদের আর হতাশ হতে হয়নি। টনি ক্রুজের ফ্রিকিক বেলের মাথা ছুঁয়ে পোস্টের সামনে পড়তেই আলতো টোকায় বল জালে জড়িয়ে দিয়েছেন রিয়াল অধিনায়ক সার্জিও র‌্যামোস (১-০)।
পিছিয়ে পড়ার পর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে আতলেতিকো। নিজেদের মধ্যে ক্রমাগত পাস খেলে, বলের দখল ধরে রেখে রিয়ালের রক্ষণদূর্গে হানা দিয়েছে তারা। ২৫ মিনিটে সমতা ফেরানোর দারুণ সুযোগ পেয়েছিল ডিয়েগো সিমিওনের শিষ্যরা। ওভারল্যাপ করে বাঁ দিক দিয়ে ঢুকে পড়ে ক্রস করেছিলেন ফিলিপে লুইস। কিন্তু হুয়ানফ্রানের শট চলে গেছে ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে।
৩৭ মিনিটে আরেকটা ভালো সুযোগ পেয়েছিল আতলেতিকো। গ্যাবির চমৎকার চিপ ধরে জোরালো শট নিয়েছিলেন আন্তইন গ্রিজম্যান। কিন্তু এই ফরাসী স্ট্রাইকার অফসাইডে থাকায় নষ্ট হয়ে যায় সুযোগটা। বিরতি পর্যন্ত প্রাধান্য ধরে রাখলেও গোলের দেখা পায়নি আতলেতিকো। তাই এগিয়ে থাকার স্বস্তি নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করেছে রিয়াল।
বিরতির পর খেলা শুরু হতেই নাটকীয়তা। ফার্নান্দো তরেসকে বক্সের মধ্যে পেপে ধাক্কা দেওয়ায় পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি। কিছুটা বিতর্কিত সিদ্ধান্ত হওয়ায় রিয়ালের খেলোয়াড়রা প্রথমে মেনে নিতে চাননি। তবে রেফারি নিজের সিদ্ধান্তে ছিলেন অটল। আতলেতিকো অবশ্য সমতা ফেরাতে পারেনি। গ্রিজম্যানের বাঁ পায়ের শট ক্রসবারের নিচের দিকে লেগে মাঠে ফিরে বাঁচিয়ে দিয়েছে রিয়ালকে।
৫৪ মিনিটে আবার আতলেতিকোর জন্য হতাশা। কর্নার থেকে সুবিধাজনক জায়গায় বল পেয়েও বাইরে মেরে আরেকটি সুযোগ নষ্ট করেছেন স্তেফান সাভিচ।
৭০ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর দারুণ সুযোগ পেয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। ডান দিক দিয়ে বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়ে জোরালো শট নিয়েছিলেন করিম বেনজেমা। কিন্তু দারুণ দক্ষতায় শটটা ঠেকিয়ে আতলেতিকোকে বিপদ থেকে রক্ষা করেছেন ওবলাক।
৭৯ মিনিটে সমতা ফিরিয়েছে আতলেতিকো। ডানদিক থেকে নেওয়া হুয়ানফ্রানের ক্রস থেকে ইয়ানিক কারাসকোর জোরালো শট জড়িয়ে গেছে রিয়ালের জালে (১-১)।
৮৫ মিনিটে কর্নার থেকে বেলের হেড ক্রসবারের ওপর দিয়ে চলে যাওয়ায় হতাশ হতে হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদকে। নির্ধারিত সময়ে কোনো দলই আর কোনো সুযোগ না পাওয়ায় খেলা গড়িয়েছে অতিরিক্ত সময়ে।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথম ১৫ মিনিট প্রাধান্য ছিল আতলেতিকোর। কিন্তু সিমিওনের দল গোলের দেখা পায়নি। পুরো ম্যাচে নিষ্প্রভ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সামনেও একটা সুযোগ এসেছিল। তবে তিনবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের প্রচেষ্টা সফল হয়নি।
শেষ ১৫ মিনিটে দুই দলই সুযোগ পেয়েছিল গোল করার। কিন্তু সফল না হওয়ায় দুই দলকে দাঁড়াতে হয়েছে টাইব্রেকারের ‘লটারি’র সামনে।
টাইব্রেকারে প্রথম তিনটি শটেও ছিল সমতা। কিন্তু পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা হুয়ানফ্রান চতুর্থ শট নিতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। তাঁর শট ফিরে এসেছে সাইডবারে লেগে। পঞ্চম ও শেষ শটটি ঠাণ্ডা মাথায় জালে পাঠিয়ে রিয়ালকে আনন্দের সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছেন রোনালদো।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button