আযান শুনে মুগ্ধ হয়ে নিজ উদ্যোগেই ইসলামের ছায়াতলে এক স্কটিশ

Minarঅন্য ধর্মের লোকজনের ইসলামে দীক্ষিত হওয়া কোনো নতুন ঘটনা নয়। কিন্তু কারো অনুপ্রেরণা ছাড়া কিংবা কোনো মুসলিম ধর্মাবলম্বীর সংস্পর্শে আসা ছাড়াই সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে ইসলাম গ্রহণের ঘটনা কিন্তু একেবারেই ব্যতিক্রম। হয়ত এ কারণেই স্কটল্যান্ডের এই মধ্যবয়সী যুবকের খ্রিস্টান থেকে মুসলিম হওয়ার খবরটি গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করছে পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমগুলো। দিন কয়েকের জন্য তুরস্ক বেড়াতে গেছেন রবার্ট (ছদ্মনাম)। সেখানকার সমুদ্র সৈকতে ঘুরে বেড়ানোর সময় আশপাশের মসজিদের মিনার থেকে ভেসে আসা আজানের শব্দ শুনতে পেতেন। আযান তার মধ্যে এক অদ্ভূত ভাবাবেগ তৈরি করত। আযান শুনতে শুনতেই ইসলাম সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে ওঠেন রবার্ট। তাইতো স্কটল্যান্ডে নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পর স্থানীয় এক বইয়ের দোকান থেকে একটি কোরআন শরিফ কিনে আনেন। কুরআন পড়তে পড়তে অদ্ভূত আবেগে আপ্লুত হতে থাকেন রবার্ট। নিজের অনেক অজানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পান। এসময় তিনি নানা দোলাচলে দুলতেন। কখনো কখনো কুরআন পড়া বাদ দেয়ারও চিন্তা করেছেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। কেননা এটি হয়ত তার জন্য নিজের কাছ থেকে পালিয়ে বেড়ান। তাই তিনি কুরআন পড়া অব্যাহত রাখেন। নিজের কোলের ওপর পবিত্র পুস্তকখানি রেখে গভীর মনোযোগের সঙ্গে পড়তেন ইংরেজিতে অনূদিত কোরআনটি।
তিনি তিন তিনবার গোটা কুরআন পড়ে ফেললেন। এরপরই ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলেন। কিন্তু এই ভেবে সে নিজেকে নিয়ে চিন্তিত ছিল যে কি ভাববে পরিবার ও সমাজের লোকজন। এসবের চাইতে তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল ব্যক্তিগত ইস্যুটি। তিনি ভাবতেন,‘আমি নিজের সম্পর্কে যা ভাবছি তা কি ঠিক? ইসলামে দীক্ষিত হওয়ার পর আমার ব্যক্তিত্বের যে পরিবর্তন আসবে তার সঙ্গে কি আমি মানিয়ে নিতে পারব?’এরপর তিনি অনলাইনে নও মুসলিমদের অভিজ্ঞতা পড়তে থাকলেন। সবার অভিজ্ঞতাই নতুন। কারো সঙ্গে কারো মিল নাই। আরবিতে কুরআন শোনেন। কিছু ইসলামিক সঙ্গীতও শুনতে শুরু করেন। গোটা প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে দীর্ঘ ১৮ মাস সময় লাগে তার। কারো কারো হয়ত আরো কম সময় লাগে। কিন্তু কারো সাহায্য ছাড়া সম্পূর্ণ একা একা সমস্ত প্রস্তুতিতে তার হয়ত খানিকটা সময় বেশিই লাগে। প্রস্তুতি শেষ হওয়ার পর তিনি নিজ শহর ইনভেরনেসে একটি ছোট মসজিদ খুঁজে বের করেন।
এরপর সাহস করে একদিন সেখানে প্রবেশ করেন এবং নিজের পরিচয় দেন। তার কথা শুনে সেখানকার মুসল্লিরা অবাক হয়ে যান। ওই মসজিদের হুজুরের কাছেই কলেমা পড়ে ইসলামে দীক্ষিত হন। সেখানকার মুসল্লিরা রবার্টকে দরাজ দিলে স্বাগত জানান। যদিও রবার্ট মনে করেন এখনো তার ইসলাম সম্পর্কে আরো অনেক কিছু জানা বাকি আছে। তিনি সেসব জানার চেষ্টা করছেন। তবে ইসলামে দীক্ষিত হওয়ায় নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছেন রবার্ট। তাইতো তিনি বলেন,‘এখন আমি মধ্যবয়সী এক শ্বেতাঙ্গ স্কটিশ মুসলিম। নিজের এই পরিচয়ে আমি ভীষণ খুশি।’

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button