ইউকের বিশাল পানের বাজার ফিরে পাচ্ছে বাংলাদেশ

Pan Supariইউকের বিশাল পানের বাজার ফিরে পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। প্রায় দেড় বছর পর জুলাই মাস থেকে বাংলাদেশের পান আমদানি শুরু হচ্ছে বলে আশা করছেন ইউকের আমদানিকারকরা। যদিও বর্তমানে বাজারে অবৈধ পথে আসা পান পাওয়া যাচ্ছে তবে বৈধপথে বাংলাদেশ থেকে পান আমদানির উপর ২০১৪ সালের জানুয়ারী থেকে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বাংলাদেশের পানে সালমনিলা নামে এক ধরনের ভেক্টেরিয়া পাওয়ায় এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইউরোপিয় ইউনিয়ন। চলতি মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে ইইউর শর্ত পুরণ করতে পারলে ১লা জুলাই থেকে সেই নিষেধাজ্ঞা অকার্যকর হবে। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শ্লথ গতির পদক্ষেপের কারণে জুনের ভেতরে তা সম্ভব হবে কি না সে ব্যাপারে সন্দিহান আছেন হাইকমিশনের কমার্শিয়াল কন্স্যুলার শরিফা খান। যদিও ইউকের আমদানিকারকরা বলছেন পরিস্থিতি ইতিবাচকের দিকেই রয়েছে।
লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কমার্শিয়াল কন্স্যুলার শরিফা খান জানান, এ নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে সালমনিলামুক্ত পানের নিশ্চিয়তা দিয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ইইউতে একটি এ্যাকশন প্ল্যান জমা দেয়া হয়েছিলো। একই সময় দেশের বিষেশজ্ঞদের তৈরী এক ধরনের উপাদানের মাধ্যমে সালমনিলামুক্ত একটি পানের নমুনাও জমা দেয়া হয়েছিলো ডেফরাতে। পরবর্তীতে চলতি বছর মে মাসের প্রথম সপ্তাহে আরো একটি এ্যাকশন প্ল্যান জমা দেয়া হয় বৃটিশ ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সিতে। এর প্রেক্ষিতে ২৮শে মে ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি আরো কিছু শর্ত পুরনের সুপারিশ করে। চলতি মাসের ২ তারিখে সেই শর্তগুলো পাঠানো হয় দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। প্রশ্ন হলো প্রায় দেড় বছর ধরে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকার পর তা সমাধানে সরকারের এতো শ্লথ গতি কেনো। এ বিষয়ে শরিফা খান জানান, একটা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুরো প্লানটি করতে হচ্ছে। এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরকারের মন্ত্রণালয়, ইউনির্ভাসিটির সাইন্স ল্যাব এবং মাঠ পর্যায়ের কাজের একটা সমন্বয় ঘটাতে হয় বলেই একটু সময় লাগে। তবে এর মাধ্যমে ইতিবাচক ফলাফল আসবে বলে মনে করছেন তিনি।
ইতিবাচক খবরই জানালেন ইউকেতে বাংলাদেশের পান আমদানিকারকরা। ১লা জুলাই থেকেই ২/৩জন রপ্তানীকারক দেশ থেকে পান রপ্তানির অনুমতি পেয়েছেন বলে জানান পাপলু ফ্রেস ভেজিট্যাবলের কমর উদ্দিন চৌধুরী। প্রাথমিক অবস্থায় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের শর্তগুলো মোটামুটি মেনে এ ৩জন রপ্তানীকারক পান পাঠাবেন। ইউকেতে আসার পর তা পরীক্ষা নীরিক্ষা করা হবে। তারা সফল হওয়ার পর তা ধীরে ধীরে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে আশা করছেন তিনি। ইউকের আমদানিকারকরা মনে করেন, দেশের সরকারের অবহেলার কারণেই ইউকের পানের বাজার হারিয়েছে বাংলাদেশ। ইউকেতে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার পাউন্ডের পান বিক্রি হয়। বাংলাদেশের পানের উপর নিষেজ্ঞার কারণে বর্তমানে এ বাজারটি ভারত এবং থাইল্যান্ডের দখলে চলে গেছে। তবে এর মধ্যে ভারতের পানই বেশি বিক্রি হচ্ছে। রপ্তানি ক্ষেত্রে ভারত সরকার অত্যন্ত আন্তরিক বলেই মনে করছেন আমদানি কারকরা। ইউকেতে ভারতের আম আমদানীতে গত বছর থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত নিষেজ্ঞাধা আরোপ করেছিলো ইইউ। ভারত সরকারের আন্তরিকতায় এক বছরের মাথায় সে নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়। বাংলাদেশ সরকার আন্তরিক হলে পানের বাজার থেকে গত দেড় বছরে সপ্তাহে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার পাউন্ড রাজস্ব লোকসান দিতো না বাংলাদেশ সরকার।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button