ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রকাশ পায় চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য

Facebookফেসবুক স্ট্যাটাস ঘাঁটলে আভাস পাওয়া যায় মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের। কেউ নিজের সম্পর্কে যখন ঢাক পেটাতে ব্যস্ত, তখন অন্য একদল অল্পেই সাংঘাতিক উত্তেজিত হয়ে আচমকা গাল পাড়েন। মনোবিদদের মতে, এর থেকে বোঝা যায় মানুষের ব্যক্তিত্বের বিকাশ।
ফেসবুক স্টেটাসের ভিত্তিতে ব্যক্তিত্ব জরিপ করতে সম্প্রতি ৫৫৫ জন ইউজারের উপর অনলাইন সমীক্ষা চালায় লন্ডনের ব্রুনেল বিশ্ববিদ্যালয়। সমীক্ষায় মূলত ৫টি চারিত্রিক বৈশিষ্টের উপর জোর দেয়া হয়। বৈশিষ্টগুলি হলো বহির্মুখিতা, অকপটতা, সহমত পোষণের ক্ষমতা, বাতুলতা এবং নীতিপরায়ণতা তথা আত্মসমীক্ষা ও আত্মরতি। বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেছেন, ফেসবুকে স্টেটাস আপডেট করার সময় অজান্তেই আমরা নিজেদের চারিত্রিক লক্ষ্মণগুলো ফুটিয়ে তুলি।
দেখা গেছে, স্বভাবত বাতুলেরা বন্ধুদের থেকে সব সময় বাহবা পাওয়ার চেষ্টা করে থাকেন। এই কারণে তারা সর্বদা নিজেদের পোস্টে লাইকস পাওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকেন। লাইকস ও কমেন্ট্স বেশি হলে তাদের আনন্দ উপছে পড়ে, কিন্তু তা না হলে মানসিকভাবে তারা ভেঙে পড়েন। তাদের মনে হয়, যথেষ্ট লাইকস ও কমেন্টস না হওয়ার অর্থ, সমাজ থেকে ব্রাত্য হয়ে পড়া। অন্য দিকে, গবেষকদের মতে বহির্মুখী মানুষ সামাজিক সংযোগের জন্য ফেসবুককে যথেচ্ছ ব্যবহার করেন। লাইকস নয়, তাদের প্রধান উদ্দেশ্য মানুষের সঙ্গে যথা সম্ভব কথোপকথনে ব্যস্ত থাকা।
ব্রুনেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক তারা মার্শাল জানিয়েছেন, ‘ফেসবুক প্রোফাইল বিশ্লেষণ করে চারিত্রিক বৈশিষ্ট বিচার করার কথা নতুন নয়। জেনে নিতে হবে কোন ধরণের মানুষ নিজের প্রোফাইল ও স্টেটাসে কী রকম মন্তব্য করেন।’ মার্শালের তত্ত্বের কিছু নমুনা দেখে নেয়া যাক।
যিনি নিজেকে সবচেয়ে ভালোবাসেন: এই ধরণের মানুষ সর্বদা নিজের কীর্তি, নিজের দৈনিক কাজকর্ম, খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম ইত্যাদি সম্পর্কে নিয়মিত পোস্ট করেন। তারা সব সময় নিজেদের পোস্টে বেশি লাইকস পেতে চান।
যিনি মুক্তচিন্তা ও সৃষ্টিশীল মনের: এই ধরণের মানুষ বেশির ভাগ সময় নিজেদের রাজনৈতিক বিশ্বাস ও বুদ্ধিদীপ্ত বিষয় সম্পর্কে ফেসবুকে আলোচনা করতে আগ্রহী হন। তারা লাইকস বা কমেন্টস নিয়ে বিশেষ মাথাব্যথা নেই। বরং তথ্য আদান-প্রদান করতেই তারা বেশি পছন্দ করেন।
যিনি নীতিপরায়ণ: এঁরা বেশির ভাগ সময় নিজেদের সন্তান সম্পর্কে পোস্ট করেন। ফেসবুকে এই ধরণের মানুষ খুব কম পোস্ট করেন। আবার যখন কিছু পোস্ট করেন, তখন অন্যরা সে সম্পর্কে কী মন্তব্য করলেন তা খুঁটিয়ে লক্ষ্য করেন।
যিনি নিজের সম্পর্কে অনুচ্চ ধারণা পোষণ করেন: তারা হামেশাই নিজের প্রণয়ী সম্পর্কে পোস্ট করেন। গবেষকরা জানাচ্ছেন, আসলে তার রোম্যান্টিক সম্পর্ক যে খুব মজবুত, তা প্রমাণ করতেই তিনি ব্যাগ্র। সাধারণত এই ধরণের পোস্টে লাইকস খুবই কম হয় এবং এই রকম মানুষকে বিশেষ কেউ পছন্দ করেন না।
তবে প্রোফাইল বা স্ট্যাটাস বিচার করে যেমন ইউজারের চরিত্রের খুঁটিনাটি বোঝা যায়, তেমনই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় সংশ্লিষ্ট মানুষটি সম্পর্কে তার ফেসবুকের বন্ধুদের মতামত। গবেষকদের মতে, পরবর্তী পর্যায়ে স্টেটাস অনুযায়ী বন্ধুদের কমেন্টস পর্যালোচনা করলে চরিত্রের আরো নানা দিক ধরা পড়ে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button