গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ালে কঠোর কর্মসূচি : খালেদা

Kaledaবিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, গ্যাস, বিদ্যুৎ  ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ালে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে। তিনি বলেন, দেশের মানুষ ভালো নেই, শান্তিতে নেই। সর্বত্র অন্যায়, অনাচার ছড়িয়ে পড়েছে। এ সরকার নির্যাতনের মাধ্যমে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে চায়। আওয়ামী লীগ এখন জনগণের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বোঝাকে সরাতে হবে। এর জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
শনিবার বিকালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের কাঁচপুরের বালু মাঠে ২০ দলীয় জোট আয়োজিত জনসভায় খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়া বলেন, দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করা হয়েছে। সিভিল প্রশাসনকে দলীয়করণ করা হয়েছে। ভালো ভালো অফিসারকে চাকরি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। কয়েকদিন আগে একজন অফিসারকে মিথ্যা অভিযোগে চাকরি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। এই অত্যাচারী সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারলের দেশে শান্তি আসবে।
তিনি বলেন, নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে সরকার। জ্বালানি তেলের দামও বাড়াবে তারা। অন্তার্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে গেছে। আমি বলব এগুলো বাড়ানো যাবে না। যদি বাড়ানো হয় আমরা বসে থাকব না।
তিনি বলেন, আমরা জনগনের কথা চিন্তা করি। এখন দেশে কোনো কর্মসংস্থান নেই। শিল্পকারখানা বন্ধ হচ্ছে। বেকারত্ব বাড়ছে। যারা দেশেকে পেছনে নিয়ে যায় তাদের দিয়ে দেশের কিছু ভালো আশা করা যায় না। আওয়ামী লীগ কথায় একটা কাজে আরেকটা। যারা এমন করে তাদের হাতে দেশ নিরাপদ নয়।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, দেশ ধ্বংসের শেষপ্রান্তে এসেছে। পুলিশ বাহিনীকে দিয়ে অপকর্ম করানো হচ্ছে। মানুষ গুম করানো হচ্ছে। সব পুলিশ বাহিনী খারাপ তা নয়। তাদের মধ্যেও দেশপ্রেমিক আছে। কিন্তু একটি বিশেষ জেলার ছাত্রলীগ-য্বুলীগকে পুলিশ বানিয়ে পুলিশের সুনাম ধ্বংস করা হচ্ছে। তাদের (পুলিশ) বলব শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে গুলি চালাবেন না। জনগণের সেবক হিসেবে থাকবেন। শত্রু হিসেবে নয়। আপনাদেরও ছেলেমেয়ে আছে। বিশেষ একটি জেলার পুলিশ নিজেরা অপকর্ম করছে। আওয়ামী লীগ মতায় টিকে থাকার জন্য যা ইচ্ছে তাই করছে। এমন করলে পাল্টা জবাব দেয়া হবে।
তিনি বলেন, অনেক হয়েছে । এইসব কাজ অনেক হয়েছে। ভবিষ্যতে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। এদেশের মানুষ দেশের জন্য অনেক কঠিন হতে পারে। যেভাবে মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে সেভাবে মানুষকে হত্যার জন্য দেশ স্বাধীন করা হয়নি।
খালেদা বলেন, আওয়ামী লীগ তো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি নয়। বিএনপি হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। কারণ শহীদ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার ডাকে সবাই মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার যুদ্ধ করে নাই। আমরা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। এটা জানতে হবে ছাত্র-যুব সমাজকে। তিনি (শেখ মুজিবর রহমান) স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি ফাঁসির ভয়ে।
২০ দলীয় জোট নেত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু মানুষ খেকো নয়, বাংলাদেশ খেকো। নারায়ণগঞ্জের সেভেন মার্ডারের খুনিরা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যাদের ধরা হয়েছে তাদেরকেও রাখা হয়েছে জামাই আদরে। র‌্যাবের জিয়া হচ্ছে সবকিছুর হোতা। তার চাকরিতে থাকার কোনো অধিকার নেই। তাকে চাকরিচ্যুত করতে হবে। নারায়ণগঞ্জে সাতজন নয় ১১ জনকে হত্যা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, ডিসেম্বর মাস বিজয়ের, এই মাস আনন্দের। কিন্তু মানুষের মনে আনন্দ নেই, কারণ তারা পদে পদে লাঞ্ছিত, গুম-হত্যার শিকার হচ্ছে।
২০ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, জামায়াতের ইসলামীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান এডভোকেট আব্দুল মবিন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির গরিবে নেওয়াজ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, জমিয়তে ওলামার মাওলানা মুহিউদ্দিন একরাম, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ আহমেদ প্রমুখ।
জনসভায় উপস্থিত ছিলেন এনডিপির খন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মুসলিম লীগের সভাপতি এ এইচ এম কামরুজ্জামান, ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোর্ত্তজা ভূইয়া, কল্যাণ পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আমিনুর রহমান, লেবার পার্টির মহাসচিব হামিদুল্লাহ আল মেহেদী প্রমুখ।
এছাড়া স্থানীয় বিএনপি নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউল করিম, সাবেক সংসদ সদস্য আতাউর রহমান আঙ্গুর, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, সোনারগাঁও বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফর, সাধারণ সম্পাদক ও সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মান্নান, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস প্রমুখ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button