মুসলমানদের উন্নতির জন্য প্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব কি ঘটছে ?

Dhaka uniপ্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯২১ সালের ১ জুলাই। কিন্তু খোদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যেন ভুলে যাচ্ছেন এই প্রতিষ্ঠানের ইতিকথা। কেউ কেউ এমন আছেন যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নবাব স্যার সলিমুল্লাহ, নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী ও শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের নাম পর্যন্ত জানেন না।
মুসলমানদের পশ্চাদপদতা : অবিভক্ত বাংলায় মুসলমানরা হিন্দুদের তুলনায় অনেক পশ্চাদপদ ছিলেন। এ কারণে তাদের মধ্যে ছিল পুঞ্জীভূত অসন্তোষ। ১৯০৫ সালে বাংলা ভাগ হলে তৎকালীন পূর্ববাংলার মানুষদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং শিক্ষা তথা জ্ঞানার্জনের দুয়ার উন্মোচিত হয়। কিন্তু বাংলার হিন্দু সম্প্রদায় বঙ্গভঙ্গের তীব্র বিরোধিতা করেন। ১৯১১ সালের ১৯ আগস্ট ঢাকায় কার্জন হলে লর্ড হেয়ারের বিদায় এবং চার্লস বেইলির আগমন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা সভায় পৃথক দু’টি মানপত্র প্রদান করা হয়। এসব মানপত্রে নবাব সলিমুল্লাহ ও নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।
বঙ্গভঙ্গ রদ : যাইহোক, হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রবল বিরোধিতার মুখে ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ হয়। বঙ্গভঙ্গ বাতিল হওয়ার ফলে পূর্ববাংলার মুসলমানদের অসন্তোষ আরো বৃদ্ধি পায়।
ব্রিটিশ ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ বাংলার পূর্বাঞ্চল অর্থাৎ পূর্ব বাংলার মুসলমানদের অসন্তুষ্টির ব্যাপারটি আঁচ করতে পেরে ঢাকায় আসেন এবং মুসলিম নেতৃবৃন্দের সাথে এক বৈঠকে বসেন। তারিখটি ছিল ১৯১২ সালের ৩১ জানুয়ারি। সেখানে নবাব স্যার সুলিমুল্লাহ, নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী, শের-ই বাংলা একে ফজলুল হকসহ ১৯ জন মুসলিম নেতা বলেন, যদি বঙ্গভঙ্গ রদ পুনর্বিবেচনা না করা হয়, তাহলে পূর্ববাংলার মুসলমানরা সর্বদিক দিয়ে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মুসলমান প্রতিনিধিরা ভাইসরয়ের কাছে অনেকগুলো দাবি পেশ করেন। তারমধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দাবি ছিল, ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হোক।
ঢাবি প্রতিষ্ঠার দাবি : লর্ড হার্ডিঞ্জ মুসলিম প্রতিনিধি দলের কাছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আশ্বাস দেন। এর আগে ১৯০৬ সালের ১ অক্টোবর আগা খানের নেতৃত্বে ভারতের ৩৫ জন মুসলিম নেতা সিমলায় ভাইসরয় মিন্টোর সাথে দেখা করে মুসলমানদের পক্ষ থেকে কতিপয় সুনির্দিষ্ট দাবি পেশ করেন। তন্মধ্যে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিও ছিল।
হিন্দুদের প্রবল বিরোধিতা:
তার এই আশ্বাসের পর পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু সম্প্রদায় ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমে পড়ে। ১৯১২ সালের ২৮ মার্চ কলকাতার গড়ের মাঠে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে হিন্দুরা প্রতিবাদ সভা ডাকে। দুঃখের বিষয়, এই প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
হিন্দুরা মনে করে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে মুসলমান সমাজকে আর দাবিয়ে রাখা যাবে না। তখন মুসলমানরা ছিলেন প্রধানত কৃষিজীবী। তারা যদি শিক্ষিত হয়ে ওঠেন তাহলে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে তারা ওপরে উঠে আসবেন। এই সম্ভাবনা তাদের বরদাস্ত হচ্ছিল না। তাই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
প্রস্তাবিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে উগ্রবাদী হিন্দুরা কতটা ক্ষিপ্ত হয়েছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায় সেকালের নেতৃবৃন্দের বক্তব্য, বিবৃতি ও পত্রিকার ভাষ্য থেকে।
১৯১২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি বড় লাটের সাথে বর্ধমানের স্যার রাসবিহারী ঘোষের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা না করার পক্ষে তারা নিন্মোক্ত যুক্তির অবতারণা করেন। তারা বলেন, পূর্ববঙ্গের মুসলমানরা প্রধানত কৃষক। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় তারা কোন মতেই উপকৃত হবে না।
সিলেটের বিপিন চন্দ্র পাল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা প্রকারান্তরে অভ্যন্তরীণ বঙ্গভঙ্গের শামিল হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অশিক্ষিত ও কৃষক প্রধান পূর্ববঙ্গের শিক্ষাদান কার্যে ব্যাপৃত থাকতে হবে; এছাড়া পূর্ববঙ্গ ও পশ্চিমবঙ্গের জনসাধারণের শিক্ষানীতি ও মেধার মধ্যে সামঞ্জস্য থাকবে না। (ঢাকা প্রকাশ, ১১ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি- ১৯১২)
এছাড়া হিন্দু সংবাদপত্র, বুদ্ধিজীবী ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে অসংখ্য প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন এবং সভার সিদ্ধান্তগুলো ব্রিটিশ সরকারের কাছে প্রেরণ করতে থাকেন। বাবু গিরিশ চন্দ্র ব্যানার্জী, ড. স্যার রাসবিহারী ঘোষ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর স্যার আশুতোষ মুখার্জীর নেতৃত্বে হিন্দু বুদ্ধিজীবীরা বড় লাট হার্ডিঞ্জের কাছে ১৮ বার স্মারকলিপি পেশ করেন।
অনিশ্চিত হয়ে পড়ে:
হিন্দুদের প্রবল বিরোধিতার ফলে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এ বিষয়ে বেশ কয়েকবার বড় লাটের কাছে নওয়াব সলিমুল্লাহ ধরনা দেন। কিন্তু আশ্বাস ছাড়া কিছুই মেলেনি। পরবর্তীতে এ নিয়ে বড় লাটের সাথে নবাবের মতবিরোধ দেখা দেয় এবং একদিন বড় লাটের অফিসে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়।
সলিমুল্লাহ ও নওয়াব আলী চৌধুরীর বিশাল অবদান:
অবশেষে হিন্দু নেতাদের প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও ১৯২১ সালের জুলাই মাসের ২১ তারিখ আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ ৫০০ একর জমি (অর্থাৎ ১৫০০ বিঘা) দান করেন। নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী সেই জমানায় কয়েক লাখ টাকা দান করেন, যার মূল্য আজ কয়েকশ’ কোটি টাকার সমান। এছাড়া শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক প্রদান করেন নিরলস শ্রম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দীর্ঘদিন পরও হিন্দুরা এটিকে ‘মক্কা বিশ্ববিদ্যালয়’ বলে ব্যাঙ্গোক্তি করতো। পশ্চিম বাংলার একশ্রেণীর হিন্দু বুদ্ধিজীবীরা পূর্ববাংলার মুসলমানদেরকে টিটকারি মেরে বলতেন, ‘পূর্ব বাংলার মুসলমানদের কালচার নেই। এদের কালচার হচ্ছে এগ্রিকালচার।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ৯৩ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। অথচ যাদের অক্লান্ত ও নিরলস প্রচেষ্টায় এটি স্থাপিত হয়েছে সেই জমিদার নবাব আলী চৌধুরী ও জমিদার চাঁদ মিয়ার কোন স্মৃতি চিহ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নেই।
সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলাম বিরোধী অপতৎপরতা:
এই হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পটভূমি। অথচ সেই বিশ্ববিদ্যালয়কে আজ একটি চিহ্নিত মহল ইসলাম বিরোধিতার আখড়ায় পরিণত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে।
গত ৪ নভেম্বর এবং ৬ নভেম্বর দৈনিক ‘ইনকিলাবে’ দু’টি খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম খবরটির শিরোনাম ‘ঢাবিতে ৩ ছাত্রী আটক’। দ্বিতীয় সংবাদটির শিরোনাম ‘নারী-পুরুষের পর্দা, আসুন সঠিকভাবে রোজা পালন করি ও চার ছাত্রীর কাহিনী’। খবর দু’টি বিস্তারিত পাঠ করলে একদিকে মুসলমান হিসেবে লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে আসে, অন্যদিকে ক্ষোভে-দুঃখে হৃদয়ে অসন্তোষের আগুন জ্বলে ওঠে। দ্বিতীয় রিপোর্ট মোতাবেক বলা হয়েছে যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং ছাত্রলীগের কাছে এখন ‘নারী-পুরুষের পর্দা’, ‘আসুন সঠিকভাবে রোজা পালন করি,’ ‘বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কোরআন শিক্ষা’ প্রভৃতি বইও এখন জঙ্গি কিংবা জিহাদী বইয়ের তালিকায়। গত ২৮ অক্টোবর একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হল থেকে ছাত্রী সংস্থা ও বিভিন্ন নিষিদ্ধ সংগঠনের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০ ছাত্রীকে হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় হল কর্তৃপক্ষ। হল ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়ে বিজ্ঞপ্তিও টানিয়ে দেয়া হয় হলে। তবে কি কারণে তাদের হল ত্যাগ করতে বলা হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ সেখানে উল্লেখ করা হয়নি। কেবল ছাত্রী হলগুলোতেই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের হলগুলোতেও নামাজ পড়া, মুখে দাড়ি রাখাসহ ইসলামের অন্যান্য বিধি-বিধানগুলো পালনে প্রায় সময় বাধা আসে বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন। কারো মুখে দাড়ি কিংবা ইসলামী লেবাস থাকলেই বিভিন্নভাবে কটূক্তি করা হয়। তাদের সব কাজেই জঙ্গি সন্দেহে নজরদারি করা হয়। মসজিদগুলোতে বসানো হয় ছাত্রলীগের পাহারা। অপর এক খবরে প্রকাশ, হিজবুত তাহরীর এবং ছাত্রী সংস্থার রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রীকে আটক করেছে শামসুন্নাহার হল ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত সোমবার শামসুন্নাহার হল থেকে সকালে নামাজের সময় নামাজ ঘর থেকে তাদের আটক এবং নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। হল কর্তৃপক্ষ সোমবার ভোরে ফজরের নামাজ পড়ার সময় নামাজ ঘর থেকে সন্দেহবশত তাদের আটক করে। পরে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নিশিতা ইকবাল নদী ও সাধারণ সম্পাদক রওশন আর নিতুলের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেত্রীরা ওই তিন ছাত্রীকে হলের একটি কক্ষে বন্দী করে জিজ্ঞাসাবাদ ও মারধর করে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
তসলিমা ও মার্কস আছে তাহলে ধর্মীয় বই থাকবে না কেন?
কোরআন-হাদীস এবং ইসলামের বই তাদের কাছে থাকলে কর্তৃপক্ষের কাছে অপরাধ বলে গণ্য হচ্ছে। অথচ কর্তৃপক্ষের নাকের ডগার ওপর দিয়ে তসলিমা নাসরীনের নিষিদ্ধ বইসহ আদি রসাত্মক বইপত্রও নাকি ছাত্রছাত্রীদের হলে এবং বুক স্টলে শোভা পায়। চে গুয়েভারা, ফিডেল ক্যাস্ট্রো, কার্ল মার্কস, লেনিন এবং মাও সে তুং এর বই রাখা যদি অপরাধ না হয়, তাহলে কোরআন-হাদীস এবং
ইসলামী বই রাখা অপরাধ হবে কেন?
মুসলমানদের তাহজীব তমদ্দুন রক্ষার জন্যই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছিল বলে তার মনোগ্রামে উৎকীর্ণ হয়েছিল এই বাক্যটি, ‘রাব্বি জিদনী এলমা’। বঙ্গানুবাদ, ‘হে আল্লাহ্ আমার জ্ঞান বৃদ্ধি কর।’ মুসলমানদের মধ্যে উচ্চ ও মানসম্মত শিক্ষা বিস্তার এটির উদ্দেশ্য ছিল বলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এশিয়ার বৃহত্তম ছাত্রাবাসটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। নাম দেয়া হয় ‘সলিমুল্লাহ মুসলিম হল’। বাংলার বাঘ শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের নামে যে ছাত্রাবাসটি প্রতিষ্ঠা করা হয় তার নাম দেয়া হয় ‘ফজলুল হক মুসলিম হল’। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তৎকালীন সরকার রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষতার পরিচয়কে জাহির করার জন্য সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি কেটে দিয়ে এটিকে সলিমুল্লাহ হল নাম দিয়ে সেক্যুলার বানায়। অনুরূপভাবে ফজলুল হক মুসলিম হলের নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি ছাঁটাই করে এই হলটিকেও সেক্যুলার বানানো হয়।
যে জাতি সুপরিকল্পিত এবং সুসংগঠিতভাবে তার ইতিহাস, ঐতিহ্য, জাতিসত্তা এবং পরিচয়কে মুছে ফেলছে তারা সেই দেশ এবং জাতির কত বড় সর্বনাশ করছে সেটি ভেবে দেশ প্রেমিক মানুষ শিহরিত হচ্ছেন। ইনকিলাব

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button