প্রবাসী ১১ সিআইপিকে মন্ত্রণালয়ের সম্মাননা

CIPবিদেশে ব্যবসা করছেন বাংলাদেশের এমন ১১ জন বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মধ্যে সিআইপি কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাদের সম্মান জানানো হয়। এ উপলক্ষ্যে রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেনে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গত কয়েকবছর ধরে বিশ্বজুড়ে চরম অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। কিন্তু এর মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি সচল আছে। এর পেছনে বড় অবদান রেখেছে প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা।’
প্রবাসীরা বাংলাদেশের গর্ব উল্লেখ করে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘চার দলীয় জোট সরকারের সময় বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি খুব ভাল ছিল। কিন্তু তার পরও তারা ক্ষমতায় থাকতে বছরে গড়ে আড়াই লাখ লোক বিদেশ যেত। কিন্তু এখন অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও ২০০৮ সালের পর থেকে গড়ে পাঁচ লাখ লোক বিদেশে কাজ নিয়ে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, জনশক্তি রপ্তানিতে আমরা অনেকটা নতুন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৬ সাল থেকে প্রথম বিদেশে কর্মী পাঠানো শুরু হয়। ওই বছর দুই হাজার সাতশ লোক বিদেশ গিয়েছিল। এখন প্রতিদিনই গড়ে দুই হাজার লোক বিদেশ যাচ্ছে।
জনশক্তি রপ্তানির পরিসংখ্যান তুলে ধরে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গত ৩৫ বছরে আমরা জনশক্তি রপ্তানিতে যতদ্রুত এগোয়েছি ভারতবর্ষের অন্য কোনো দেশ এত দ্রুত উন্নতি  করতে পারেনি। ২০১২ সালে ভারত বিদেশে যত কর্মী পাঠিয়েছে বাংলাদেশও তার প্রায় সমপর্যায়ে কর্মী বিদেশ পাঠিয়েছে।’
বাংলাদেশি কর্মীদের প্রশংসা করে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশিদের মধ্যে ভাষা শেখার ক্ষেত্রে অন্তর্নিহিত ক্ষমতা আছে। এছাড়া তারা কর্মদক্ষ, সততা ও সদ্ব্যবহারের অধিকারী হওয়ায় আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে তাদের কদর বেশি। যদি কর্মী নিয়োগে বাধ্যবাধকতা না থাকতো তাহলে বিদেশিরা ৮০ ভাগ শ্রমিক বাংলাদেশ থেকে নিতো।’ প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী জানান, চারদলীয় জোট আমলে দেশে প্রতিবছর প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ ছিল সাত থেকে আট বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এখন দেশে রেমিটেন্স আসছে ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘অনেকে জানেন না প্রবাসীদের কল্যাণের জন্য একটি মন্ত্রণালয় আছে। আমাদের কাজ প্রবাসীদের কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানো। প্রবাসীরা যদি এই মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ-সম্পর্ক বাড়ায় তবে তাদের সমস্যাগুলো আর দ্রুত সমাধান করা সম্ভব হবে।’
মন্ত্রী জানান, প্রবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রত্যেকটি জেলার ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ে প্রবাসীকল্যাণ ডেস্ক খোলা হয়েছে। অথচ অনেকেই এ ব্যাপারে জানেন না।
প্রবাসীকল্যাণ সচিব খন্দকার শওকত হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জনশক্তি রপ্তানি ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক বেগম শামছুন্নাহার, প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিএম কয়েস সামি প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আজহারুল হক।
সিআইপি কার্ড পেলেন যারা
দুবাই প্রবাসী মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান, আবুল কালাম, মুহাম্মদ আবুল কালাম,  কাতার প্রবাসী মোহাম্মদ সামছুল আলম, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, আব্দুল আজিজ খান,  ওমান প্রবাসী আবুল কালাম আজাদ, কাজী সফিকুল ইসলাম,  যুক্তরাজ্য প্রবাসী মোহাম্মদ আলী তালুকদার, মোহাম্মদ আদনান ইমাম। এছাড়া বিদেশে বাংলাদেশি পন্যের আমদানীকারক মো. ফিরোজ উল আলম।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button