ঘরের নারী বাইরে, বাইরের নারী ঘরে

মুহাম্মাদ ফজলুল বারী
কিছুদিন আগে ‘দৈনিক প্রথম আলো’তে একটি লেখা পড়ছিলাম। হংকং থেকে লিখে পাঠিয়েছেন তারিক নামক জনৈক ব্যক্তি। শিরোনাম- গৃহকর্মীদের স্বর্গ হংকং। সে দেশে অভিবাসী গৃহকর্মীদের সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ। এদের প্রায় সবাই নারী , যারা ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, থাইল্যন্ড, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে গৃহকর্মী হিসেবে সেখানে গিয়েছেন। পত্রিকার খবর অনুসারে সে দেশে দিনদিন গৃহকর্মীর চাহিদা বাড়ছে। স্থানীয় অনেকে বাংলাদেশ থেকে গৃহকর্মী নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সরকারী পর্যায়ে নাকি এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনাও চলছে। এ উদ্যোগ সফল হলে আগামী দুই বছরের মধ্যে বাংলাদেশের ৫০ হাজার নারী গৃহকর্মী হিসেবে হংকং যেতে পারবনে। তারা বছরে কমপক্ষে ৯৭ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা পাঠাতে পারবেন।
সে দেশে নারী গৃহকর্মীর চাহিদা বাড়ার কারণ পত্রিকা থেকে হুবহু তুলে ধরছি। ‘‘এখানে দুটি কারণে গৃহকর্মীদের চাহিদা বাড়ছে। প্রথম কারণ, বৃদ্ধ লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি। দ্বিতীয় কারণ, মহিলাদের বিভিন্ন পেশায় অংশগ্রহণের হার বৃদ্ধি। বৃদ্ধ ও শিশুদের দেখাশোনার জন্য গৃহকর্মীর প্রয়োজন।’’
বাহ্! কী সুন্দর ব্যবস্থাপনা!! ঘরের নারী বাইরে আর বাইরের নারী ঘরে। ঘরের নারী বাইরে গিয়েছেন চাকরি করতে,এখন এ ঘরের নারীর প্রয়োজন পুরা হবে কীভাবে? সন্তান ও বৃদ্ধদের দেখাশোনার জন্য নারীর প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। তা আঞ্জাম দিবে কোন্ নারী? বাইরে থেকে নারী আনো। এখন বাইরে থেকে যে নারী এসে এ ঘরের প্রয়োজন মেটালো তার ঘর তো খালি রেখে গেল। তার ঘরের নারীর প্রয়োজন মেটাবে কে? তার সন্তান লালন পালন করবে কে? হাঁ, সে তো মাসে মাসে মোটা অংকের টাকা কামাবে সুতরাং তার বাসায় মাইনে দিয়ে ঝি রেখে দিলেই তো হয়ে গেল। ব্যস, সব সমাধান। কিন্তু একটি সংসারে একজন নারীর অবদান কি এতটুকু? একজন ঝি বা গৃহকর্মীর দ্বারা কি সে শূণ্যতা পূরণ হওয়া সম্ভব? একটি সংসারে একজন নারী হলেন বটবৃক্ষ। আগলে রাখেন স্বামী সন্তান সবাইকে। সুখে দুঃখে অকৃপণ ছায়া দান করেন। সোহাগ, শান্তনা  সাহস ও প্রেরণা দিয়ে গড়ে তুলেন পরিবার, সমাজ, জাতি ও দেশ। নারীর এত এত অবদানকে খাটো করে দেখা হচ্ছে! তাকে বলা হচ্ছে ‘অচল অঙ্গ’!  নিজেকে ‘সচল অঙ্গ’ হিসেবে প্রমাণ করতে তাকেও সরাসরি ‘অর্থযন্ত্র’ হতে হবে!
ফলে মান-সম্মান, ইজ্জত-আব্রু, স্বামী-সংসার, সন্তান-পরিবার সব বিসর্জন দিয়ে এমন কি ঈমান-আখেরাত বিসর্জন দিয়ে হলেও এ কালিমা (!) দূর করতে নারী ঝাঁপিয়ে পড়েছে কর্মের ময়দানে। ছুটে চলেছে অর্থ পানে। যদি সে অর্থ অনর্থ ডেকে আনে আনুক।
যা হোক, বলছিলাম, এ কেমন ব্যবস্থাপনা। ঘরের নারী বাইরে যাবেন অর্থ উপার্জন করতে আর তার সন্তান ও অন্যান্যদের দেখাশোনার জন্য ভিনদেশ থেকে নারী আসবে। সেও আসবে অর্থ উপার্জনের জন্য। এতে কমপক্ষে দুটি পরিবারের সন্তানেরা মায়ের স্নেহ-মমতা থেকে বঞ্চিত হবে, এর বিপরীতে পাবে মায়ের কামানো অর্থের পরশ। তা কি পূরণ করবে মায়ের অভাব, একটি সংসারের গৃহকর্ত্রীর শূণ্যতা?
এরপর আসে নারীর নিরাপত্তার বিষয়টি। এ নারীদের অধিকাংশই যুবতী। দূর পরবাসে কে তাদের নিরাপত্তা দিবে? আইন ও আইনের লোকের প্রসঙ্গ আসবে তো বিপদে পড়ার পর। ততক্ষণে তো তার যা ক্ষতি হবার হয়েই যাবে। আর পরবাসে কজনই বা আইনের ঝামেলায় জড়াতে যাবেন। নিরবে সয়ে যাবেন যুলুম, পাছে আবার কোন্ বিপদে পড়তে হয়। তখন এত টাকা খরচ করে বিদেশ আসার পর আমও যাবে ছালাও যাবে। দেশেই গৃহকর্মী বা অভিভাবকহীন নারী শিক্ষার্থীকে এ অবস্থার সম্মুখীন হতে হয় আর সে তো বিদেশ। এছাড়া অভিভাবকহীন এ যুবতী নারী সে নিজেই বা নিজেকে কতদিন কতটুকু সৎ রাখতে সক্ষম হবেন?
সামান্য কয় কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রার কাছে কি ৫০ হাজার নারীর নিরাপত্তার এ বিষয়গুলো গৌণ?
৫০ হাজার নয়, ৫০ বা ৫ জন নয় বরং একজন নারীকে এমন নিরাপত্তাহীন অবস্থায় ফেলে ৯৭ কোটি নয় বরং ৯৭ লক্ষ কোটি টাকা লাভ হওয়াকেও ইসলাম সমর্থন করে না, একে উন্নতি গণ্য করে না।
আর ‘ওদের’ কাছে ৯৭ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রাই বড়, এটাই তাদের কাছে উন্নতি। ৫০ হাজার নারীর নিরাপত্তাহীনতার বিষয় তাদের ৯৭ কোটির কাছে গৌণ। এখন আলেম-উলামা দ্বীনদার শ্রেণী যদি এই পঞ্চাশ হাজার নারীর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হন, কথা বলেন তাহলে তা হয়ে যাবে তাদের তথাকথিত ‘উন্নতির’ পথে প্রতিবন্ধক। তারা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দিবে – দেশে এত এত বৈদেশিক মুদ্রা আসবে, দেশের উন্নতি হবে আর মোল্লা মৌলভীরা এর বিরোধিতা করে। এরা উন্নতি অগ্রগতি ও প্রগতির পথে প্রতিবন্ধক, এরা পশ্চাৎপদ, সেকেলে।
পাঠক, আর দশটা ক্ষেত্রেও তাদের এ জাতীয় চিৎকার চেঁচামেচির বাস্তবতা এটিই। কোনোটা আমরা খালিচোখে ধরতে পারি, কোনোটা ধরিয়ে দিলে বুঝি। ভেবে দেখুন, এটাকে কি আমরা উন্নতি অগ্রগতি বলতে পারি। আর প্রগতির সাথে কি এর দূরতম সম্পর্ক রয়েছে?
ইসলাম ঐ উন্নতি চায় যা সকলের কল্যাণ সাধন করে, কারো ক্ষতির কারণ হয় না। ওরা যদি নারীর মর্যাদা ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা চাইত, তাহলে নারীর মর্যাদা ও নিরাপত্তা রক্ষা হয় এমন পথই বেছে নিত। যেটা করেছে ইসলাম। ইসলাম কি নারীর অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দেয়নি? তাহলে দেনমোহর, পিতা, ম্বামী সন্তানের মিরাস এবং মর্যাদা ও নিরাপত্তা ঠিক রেখে অর্থ উপার্জনের অধিকার কেন দিয়েছে? তার উপর তো কারো ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নেই। কিন্তু তার আমরণ ভরণ পোষণের দায়িত্ব হয় পিতার, নয় স্বামীর না হয় সন্তানের। কেউ নেই তো রাষ্ট্রের।
নারী শুধু ভাবে, নারীর জন্য এত শর্ত কেন ইসলামে? তারই নিরাপত্তার জন্য, মর্যাদা রক্ষার জন্য। এই যে পেশার দিকে ৫০ হাজার নারীকে আহবান করা হচ্ছে। তা কি নারীর জন্য নিরাপদ ও সম্মানের? তা কি ৫০ হাজার পরিবারের বিশৃঙ্খলার কারণ হবে না? তা কি দেশ ও সমাজের জন্য কল্যাণকর?
এ কথা আমাদের ভালোভাবে বুঝতে হবে, কর্মের ময়দান দুটি, ঘর এবং বাহির। আর পত্রিকার এ খবর থেকেই আমরা স্পষ্ট বুঝতে পারছি ঘরের ময়দানে নারীর অপরিহার্যতা অনস্বীকার্য। (আর এ প্রয়োজন গৃহকর্মী নারীর দ্বারা সম্ভব নয়, প্রয়োজন মা ও গৃহকর্ত্রীর) এটা আল্লাহর বিধান, প্রকৃতির নিয়ম। এর ব্যাতিক্রম হলে বিশৃঙ্খলা হতে বাধ্য। আল্লামা মুফতী তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুম বলেন, ‘‘আমরা শেষমেষ এ দেশের নারী সমাজকে কোন্ পর্যায়ে পৌঁছাতে চাচ্ছি? নারীর অসম্মান, অসতিত্ব ও অপবিত্রতার এমন পর্যায়ে যা পশ্চিমা নারীর এক বিশাল অংশের; বরং সংখ্যাগরিষ্ঠের ভাগ্যে ছিল? যেখানে পৌঁছার পর নারিত্বের সবচে বড় সম্পদটুকুই খোয়া যায় নি; বরং প্রকৃতির সঙ্গে বিদ্রোহের ফলে সেখানে পরিবার ব্যবস্থায়ও ধস নেমেছে? অবস্থা এই দাঁড়িয়েছে যে, রাস্তা পরিষ্কার করা ও হোটেলে গ্রাহকদের বিছানা ঠিক করা থেকে শুরু করে নিজের শরীর দেখানো পর্যন্ত পৃথিবীর এমন ঘৃণ্য থেকে ঘৃণ্যতম কাজ নেই, যা নারীদের উপর চাপানো হয় নি। একদিকে সন্তান মাতৃমমতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, গৃহ-গৃহকর্ত্রীর অভাবে হাহাকার করছে, অন্যদিকে পথ ঘাট, হাট-মাঠ নারীর শোভা-সৌন্দর্যে মজে থাকছে; কৃত্রিম সাজে বাণিজ্য বিজ্ঞাপনের কাজ হচ্ছে, তার এক একটা অঙ্গকে লালসার টোপ বানিয়ে সারা পৃথিবী জুড়ে ডাক দেওয়া হচ্ছে। আসুন আমাদের সেবা নিন, আমাদের পণ্য কিনুন।’’
আর যেসব যুক্তিতে নারীকে ঘরের বাইরে আনার চেষ্টা চলছে সে সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘নারীদের ঘরের বাইরে আনার জন্য বর্তমানে একটা যুক্তি ভালোই কাজ দিচ্ছে। তা এই যে, ‘জাতি গঠন ও জাতির উন্নয়নে আমরা আমাদের অর্ধ সমাজকে এভাবে নিষ্ক্রিয় রাখতে পারি না।’ যুক্তিটা শুনে মনে হয়, আমাদের দেশের সকল পুরুষকে কোনো না কোনো কাজে লাগিয়ে পুরুষের দ্বারা যতটুকু কাজে নেয়া সম্ভব তা পুরোপুরি করিয়ে নেওয়া হয়ে গেছে। এখন কোনো পুরুষ বেরোযগার নেই; বরং হাজার হাজার কাজ পড়ে আছে ‘মানব শক্তির’ অপেক্ষায়।
অথচ এ ধরনের কথা এমন একটা দেশে কতটা যৌক্তিক? যেখানে অনেক উচ্চশিক্ষিত ডিগ্রীধারী পুরুষকেও কাজের জন্য ঘুরে মরতে হয়? যেখানে কোনো চাপরাশি অথবা ড্রাইভারীর বিজ্ঞাপন প্রচার হলে, শ শ গ্রাজুয়েট; আর ব্যাংকের জায়গা খালি হলে শ শ মাস্টার্স বা তদুর্ধ ডিগ্রীধারীগণও আবেদন করেন। প্রথমে পুরুষ ‘অর্ধ সমাজ’কে রাষ্ট্র গঠন ও উন্নয়নের কাজে পুরোপুরি লাগান। এরপর বাকি ‘অর্ধ আবাদি’ নিয়ে ভাবা যাবে, তা সচল না অচল?
তাছাড়া যে নারী জাতির পরিবার ব্যবস্থার মৌলিক সেবাগুলো প্রদান করছে, অর্থাৎ ভবিষ্যতের কর্মপুরুষদের লালন-পালন করছে এবং তার অমূল্য নারিত্ব সম্পদ দিয়ে সমাজে পবিত্রতা, অনাবিলতা এবং সতিত্ব ও চরিত্রের উন্নততর মূল্যবোধ রক্ষার পূতকার্য সম্পন্ন করছে তাকে ‘অচল অঙ্গ’ বলে ব্যক্ত করা পাশ্চাত্যের কূতর্কেরই কারিশমা। যাদের চোখে কর্মক্ষম শুধু সে-ই যে বেশি থেকে বেশি অর্থ উপার্জন করে; এতে সারা দেশে যতই নৈতিক ধ্বস নামুক আর চরিত্র বিধ্বংসী বীজ ছড়াক। আর যে উপার্জন করে না সে-ই ‘অচল অঙ্গ’, সমাজের নীতি নৈতিকতার বিনির্মাণে তার শত অবদানই থাকুক না কেন।
জানতে চাই ‘পরিবার ব্যবস্থা’ও সমাজের কোনো অংশ কিনা? এবং ব্যক্তির চরিত্র ও কর্মও সমাজের কোনো রক্ষাযোগ্য বিষয় কিনা?…’’ (ইসলাহে মুআশারাত/সমাজ সংশোধনের দিক নির্দেশনা,মুফতি মুহাম্মাদ তাকী উসমানী,রাহনুমা প্রকাশনী,বাংলাবাজার  থেকে প্রকাশিত,পৃ. ১০৪,১০৫)
আর আগেই বলা হয়েছে যে, নারীর ভরণ-পোষণের দায়িত্ব পর্যায়ক্রমে পিতা,স্বামী, সন্তান বা  নিকটাত্নীয়ের।  যে নারীর কেউ নেই তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কোনো নারী যদি এমন অসহায় হন যে, তার কোনোই অবলম্বন নেই এবং রাষ্ট্রও তার দায়িত্ব নেয়নি। এখন তার উপার্জনের প্রয়োজন । তখন সমাজের মানুষের উচিত তার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া। আর তার জন্য তো ইসলামে যাকাতের ব্যবস্থা রয়েছেই। এর মাধ্যমে তার প্রয়োজন পুরা হওয়া অবশ্যই সম্ভব। আর এ সবকিছু থেকে যে নারী বঞ্চিত তার উচিত বা বলতে পারি আমাদের উচিত তার উপার্জনের নিরাপদ ব্যবস্থা করা। কিন্তু কোন অবস্থাতেই আমরা একজন নারীকে অনিরাপদ পরিবেশে ঠেলে দিতে পারি না; অনিরাপদ কর্মসংস্থানের দাওয়াত দেয়া তো দূরের কথা।
শেষকথা, আমরা মুমিন। আমরা আখেরাতে বিশ্বাসী। আমাদের জীবন-ভাবনা দুনিয়া ও আখেরাত কেন্দ্রিক। যাদের জীবন শুধু দুনিয়া কেন্দ্রিক তাদের মত করে আমাদের ভাবলে হবে না। যারা আল্লাহর সিমারেখার ধার ধারে না তাদের লাইফস্টাইল আমরা গ্রহণ করলে চলবে না। তাদের ‘সিডওসনদে’ মুসলিম নারীর মুক্তি মিলবে ন। মুসলিম নারী তো মুক্তি চায়, দুনিয়াতে ও আখেরাতে।  ওদের বাতলানো মুক্তির পথে আমাদের মুক্তি মিলবে না। আমরা তো বলেছি,
‘রাদী-না বিল্লা-হি রাববান/রব হিসেবে আমরা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট।’ তাঁর সকল বিধান আমরা সন্তুষ্টচিত্তে গ্রহণ ও পালন করতে প্রস্ত্তত। তাঁর বিধানের ক্ষেত্রে  আমাদের  কারো  সাথে কোনো আপস নেই। তাঁর বিধানে কোনো পরিবর্তন পরিবর্ধন নেই।
‘ওয়া বিল ইসালা-মি দ্বী-নান/ দ্বীন হিসেবে ইসলামের প্রতি আমরা সন্তুষ্ট’ সুতরাং ইসলামের বাইরে সকল মত পথ আমরা আস্বীকার করি। তা বাহ্যত যতই কল্যাণকর মনে হোক;আসলে তা মরিচিকা। তা যতই ইনসাফের খোলসে আসুক আসলে তা যুলুমের মাকাল ফল। আল্লাহর কাছে ইসলামই একমাত্র মনোনীত ধর্ম।
সুতরাং আমরা আর সবকিছুকে প্রত্যাখ্যান করেছি। যা কিছুই আল্লাহর বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক তা-ই প্রত্যাখ্যাত; বাহ্যত তা যতই উন্নতি অগ্রগতি বলে মনে হোক।
‘ওয়া বি-মুহাম্মাদিন নাবিয়্যান/ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লামকে নবী হিসেবে পেয়ে আমরা সন্তুষ্ট।’ তাঁর মাধ্যমেই আমরা পেয়েছি হেদায়েতের আলো। তাঁর মাধ্যমেই আমরা পেয়েছি আল্লাহর কালাম, যা মানব জাতির জন্য হেদায়েত , যা পার্থক্য করে দেয় হক বাতিলের মাঝে। তাঁর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ, চিরকৃতজ্ঞ। তিনি আমাদের কাছে প্রিয়; আমাদের মা-বাবা,সন্তান-সন্ততি,পরিবার-পরিজন এবং পৃথিবীর সকল মানুষের চেয়ে প্রিয়। এমন কি আমাদের জানের চেয়েও প্রিয়। তিনিই আমাদের আদর্শ, চির আদর্শ। তাঁর সুন্নতই  আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের চলার পথ,আমাদের রাতদিন,আমাদের জীবন-মরণ। তাঁর চেয়ে আমাদের নিঃস্বার্থ কল্যাণকামী আর কেউ নেই। তাঁর বাতলানো পথেই আমাদের কল্যাণ। কল্যাণকামীর মুখোশে যত শ্লোগান সবই মাকাল ফল।
সুতরাং এসো হে বোন, কল্যাণের পথে এসো। শুধু দুনিয়ার কল্যাণ নয়। দুনিয়ার কল্যাণ, আখেরাতের কল্যাণ। নব্য সভ্যতার চোরাবালিতে ফেঁসে যেয়ো না। নিজের প্রকৃত মর্যাদা অনুধাবন কর, আদর্শ সমাজ গঠনে তোমরাই কান্ডারী…।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button